• রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২৫ অপরাহ্ন

প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল করলো কলকাতা হাইকোর্ট

প্রতিনিধির নাম / ১১২ বার দেখা
আপডেট : সোমবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৪

পশ্চিমবঙ্গের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়সহ একাধিক কর্মকর্তা জেলে। সেই মামলার রায় ঘোষণা করছেন কলকাতা হাইকোর্ট। লোকসভা ভোট শুরু হয়ে গেছে। প্রথম দফার ভোট শেষ। এই পরিস্থিতির মধ্যেই সোমবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা করলেন কলকাতা হাইকোর্ট। 

গত কয়েক বছরে এই মামলা রাজ্যের সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে এই নিয়োগ দুর্নীতি মামলা গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে দাবি করছেন বিরোধীরা। বস্তুত রায় বের হওয়ার পরেই রাজ্যের সাবেক বিচারপতি এবং বর্তমানে তমলুকে বিজেপির প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। রায়কে স্বাগত জানিয়ে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ দাবি করেছেন।

অভিজিত বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে জোচ্চুরি করেছেন। তার পদত্যাগ করা উচিত।’সোমবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শাব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ নিয়োগ দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা করছে। সব মিলিয়ে ৩৫০টি মামলা রুজু হয়েছিল এই ঘটনায়।

রায় ঘোষণার শুরুতেই আদালত জানিয়েছেন, প্রতিটি মামলাই আদালতে গ্রহণযোগ্য। এরপর বলা হয়, ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ বাতিল করা হচ্ছে। এর ফলে বাতিল হচ্ছে ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি। এসএসসি প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর যারা চাকরি পেয়েছেন তাদের সুদসহ বেতনের টাকা ফেরত দিতে হবে।

আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে এই অর্থ ফেরত দিতে হবে। বার্ষিক সুদের হার ১২ শতাংশ হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে আদালত।

উল্লেখ্য, এর আগে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছিলেন সাবেক বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তার নির্দেশে বহু নিয়োগ বাতিল হয়েছিল। রাজ্যের সাবেক মন্ত্রী জামিন পাননি। পরে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় চাকরি ছেড়ে রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন। বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন তিনি। যা নিয়ে নানা স্তরে বিতর্ক হয়েছে।

সোমবার সেই নিয়োগ দুর্নীতি মামলার রায় দেন কলকাতা হাইকোর্ট। এর আগে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে প্রায় সাড়ে তিন মাস ধরে মামলাটি চলেছিল হাইকোর্টে। গত ২০ মার্চ শুনানি শেষ হয়। কিন্তু আদালত রায় ঘোষণা স্থগিত রেখেছিল। সোমবার সেই বহু প্রতীক্ষিত রায় ঘোষণা হয়।

আদালত জানিয়েছেন, মানবিক কারণে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা যাবে না ক্যান্সার আক্রান্ত সোমা দাসকে। কিন্তু বাকি প্রায় ২৬ হাজার জনের চাকরি বাতিল করা হচ্ছে। অন্যদিকে এসএসসি পরীক্ষার সব উত্তরপত্র এসএসসি-র ওয়েবসাইটে আপলোড করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আদালত জানিয়েছেন, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত চালিয়ে যাবে সিবিআই। প্রয়োজনে সন্দেহভাজনদের হেফাজতে নিয়ে তারা জিজ্ঞাসাবাদও করতে পারবে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সব মিলিয়ে ৩৫০টি মামলার শুনানি হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচ হাজার চাকরিপ্রার্থীর মামলাও আছে। আদালতের নির্দেশে যাদের চাকরি চলে গেছিল। সুপ্রিম কোর্ট তাদের রক্ষাকবচ দিলেও ছয়মাসের মধ্যে মামলা শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

গত প্রায় তিন বছর ধরে কলকাতার রাস্তায় বসে আন্দোলন করছেন চাকরিপ্রার্থীরা। তাদের দাবি, পরীক্ষায় পাশ করা সত্ত্বেও তারা চাকরি পাননি। নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে। প্রায় ২৫ হাজার চাকরিপ্রার্থী নানাভাবে এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। সোমবার আদালতের রায়ে এই সমস্ত চাকরিপ্রার্থীর ভবিষ্যৎ স্থির হলো। একইসঙ্গে যারা চাকরি পেয়েছিলেন, তাদের নিয়োগ বৈধ কি না, সে বিষয়েও রায় জানিয়ে দিল আদালত।

এদিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার রায় নিয়ে ভোটের ময়দানে নেমে পড়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই বিজেপিপ্রার্থী অভিজিৎ তার মতামত জানিয়ে দিয়েছেন। আগামী দিনে ভোট প্রচারে এই বিষয়টি সামনের সাড়িতে আসবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ