সূর্যোদয়ের কিছুক্ষণ পর দুই বা চার রাকাত নামাজের বিশেষ ফজিলত বিভিন্ন হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। এ সময়ের নফল নামাজ ইশরাকের নামাজ হিসেবে পরিচিত। নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম) সব সময় ইশরাকের নামাজ আদায় করতেন। সাহাবিদেরও ইশরাকের নামাজ আদায় করতে উৎসাহিত করতেন।
আবু হোরায়রা (রা.) বলেন, নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে তিনটি কাজের ব্যাপারে অসিয়ত করেছেন যেন মৃত্যু পর্যন্ত এগুলো না ত্যাগ করি; এক. (রাতে নিদ্রা থেকে জাগ্রত হওয়ার দৃঢ় বিশ্বাস না থাকলে) বিতরের নামাজ আদায় করে ঘুমানো। দুই. প্রত্যেক মাসে তিন দিন রোজা রাখা। তিন. ইশরাকের দুই রাকাত নামাজ আদায় করা। (সহিহ মুসলিম: ১৭০৪)
আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে ফজর নামাজের পর মসজিদে বসে কিছুক্ষণ জিকির করে সূর্যোদয়ের পর ইশরাকের নামাজ আদায়ের বিশেষ ফজিলতের কথা এসেছে। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি জামাতের সাথে ফজরের নামাজ আদায় করে সূর্যোদয় পর্যন্ত সেখানে বসে আল্লাহর জিকির করে এবং এরপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করবে, সে একটি হজ ও ওমাহ পালনের সওয়াব লাভ করবে। আনাস (রা.) আনহু বলেন, রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরও বলেছেন, এটি অবশ্যই পূর্ণ হজ ও ওমরাহর সওয়াব। (সুনানে তিরমিজি: ৫৮৬)
নুয়াইম ইবনে হাম্মার গাতফানি (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে নবিজি (সা.) আল্লাহ তাআলার কথা বর্ণনা করেন যে, আল্লাহ তাআলা বলেন, হে আদম সন্তান! দিনের শুরুতে চার রাকাত নামাজ আদায় করলে দিনের শেষ পর্যন্ত আমি তোমার জন্য যথেষ্ট হবো। (সুনানে তিরমিজি: ১২৮৯)
হাদিসের ব্যাখ্যাকারদের বেশিরভাগের মতে এ হাদিসেও ইশরাকের চার রাকাত নামাজের কথা বলা হয়েছে।
সূর্য কিছুটা মাথার ওপরে ওঠার পর অর্থাৎ সূর্যোদয়ের পনেরো/বিশ মিনিট পর ইশরাকের ওয়াক্ত শুরু হয়। দ্বিপ্রহরের আগ পর্যন্ত ইশরাকের নামাজ আদায় করা যায়।
ইশরাকের নামাজের জন্য বিশেষ কোনো নিয়ত নেই। আরবিতেও নিয়ত বলা আবশ্যক নয়। শুধু এইটুকু বললে বা মনে মনে স্থির করলেই হবে যে, আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ইশরাকের দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করছি।
ইশরাকের নামাজ অন্যান্য নফল নামাজের মতোই দুই রাকাত করে আদায় করতে হয়। দুই রাকাত করে দুই, চার, ছয় বা আট রাকাত নামাজ পড়া যায়। অনেক আলেমের মতে ইশরাকের নামাজ বারো রাকাত পর্যন্ত পড়া যায়।